দাউদ পাবলিক স্কুলের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সামরিক ভূমি ও সেনানিবাস অধিদপ্তরের অধীনে যশোর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত দাউদ পাবলিক স্কুল দেশের ঐতিহ্যবাহী সেরা পাবলিক স্কুলগুলোর অন্যতম। ১৮.৭১ একর ভূমির উপর বিচিত্র বৃক্ষরাজি শোভিত যশোর সেনানিবাসের কেন্দ্রস্থলে ছায়ায় ঢাকা এক স্নিগ্ধ-শান্ত পরিবেশে বিদ্যালয়টি অবস্থিত।এ বিদ্যালয়ে রয়েছে ৫০০ আসন বিশিষ্ট একটি অডিটোরিয়াম, আধুনিক মানের লাইব্রেরী, কম্পিউটার ল্যাব, বিভিন্ন বিষয়ের পরীক্ষাগার, দুটি খেলার মাঠ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবহনের জন্য ৪টি বাস ও প্রশাসনিক কাজে ব্যবহারের জন্য ১টি মাইক্রোবাস। সামরিক কর্মকর্তাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলেও এখানে বেসামরিক ব্যক্তিবর্গের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্যও সুযোগ রয়েছে।এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান উন্নত এবং এর প্রাথমিক ও জুনিয়র বৃত্তিসহ এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল সব সময়ই সন্তোষজনক।
দাউদ পাবলিক স্কুল এদেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । স্বাধীনতার পূর্বে স্বনামধন্য এ প্রতিষ্ঠানটি ছিল একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল এবং তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন পাবলিক স্কুলের সমমানের।তখন এখানে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস অনুসরণ করা হত।১৯৫৯ সালের প্রথম দিকে তৎকালীন ক্যান্টনমেন্ট একজিকিউটিভ অফিসার মহিউদ্দিন জিলানীর উদ্যোগে মিস নাইটিংগেল, মিস র্যা মবোল্ড, মিসেস ঊষা রবিনসন, মিঃ নেলসন ও প্রভা মজুমদারের সহযোগিতায় স্কুল তৈরীর প্র¯ত্ততি গ্রহণ করা হয়। স্কুলের জায়গা নির্ধারণ করা হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত এয়ার বেসের বিমান বন্দরে (বর্তমান পান্থপাড়া মানিক শাহ দরগার সামনে) ব্রিটিশের গুদামে।প্রথমে ১টি অফিস রুম ও ২টি ক্লাশরুম নিয়ে যাত্রা শুরু হয়। মেসার্স দাউদ গ্র“প অব ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃক ১৯৫৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সাড়ে ছয় লক্ষ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের মূল ভবন নির্মিত হয় এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান দাতা দাউদ খানের নাম অনুসারে দাউদ পাবলিক স্কুল নামকরণ করা হয়।এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল মোহাম্মদ আয়ুব খান।ফাউন্ডার প্রিন্সিপাল হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মিস কে এন র্যামবোল্ড।
১৯৬১ সালের ১৭ জুন প্রথম ক্লাস শুরু হয়।১৯৬৪ সর্বপ্রথম ছাত্র-ছাত্রীরা ম্যাট্রিক (এসএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।১৯৬৯ ও ১৯৭০ সালে যশোর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক যথাক্রমে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী অনুমোদন লাভ করে।তখন শুধুমাত্র মানবিক শাখা চালু ছিল। ১৯৭৭ সালে বিজ্ঞান শাখা চালু হয়।১৯৬০ সাল থেকে রেড ও গ্রীণ নামে দুটি হাউস চালু করা হয়।১৯৭৩ সালে নজরুল ও মাইকেল এবং পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে নজরুল, মাইকেল, শহীদুল্লাহ ও জসীমউদ্দিন এবং পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে নজরুল, মাইকেল ও শহীদুল্লাহ নামে তিনটি হাউসে বিভক্ত করা হয়।বর্তমানে মাইকেল হাউসের নামকরণ করা হয়েছে মধুসূদন হাউস।১৯৮৩ সালে দাউদ পাবলিক স্কুল থেকে কলেজ সেকশন আলাদা হয়ে ক্যান্টনমেন্ট কলেজ নামে পৃথক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।১৯৯৫ সালে অত্র স্কুলের নার্সারী ও কেজি শ্রেণী দুটি আলাদা হয়ে সেনানিবাসের অভ্যন্তরে পরশমনি কিন্ডার গার্ডেন (বর্তমানে যশোর ইন্টারন্যাশনাল স্কুল – JIS) নামে আলাদা একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।